পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের বিষুষ্ণপুর মনিরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি না থাকলেও উৎকোচের বিনিময়ে ওই বিদ্যালয়ে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি এলাকায় নানা গুঞ্জন ও আলোচনার সৃষ্টি করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষুষ্ণপুর মনিরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে লাইব্রেরির কোনো কক্ষ, আলমারি, বই কোনোকিছুই নেই। শুধু বিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে রয়েছে ‘লাইব্রেরিয়ান’ পদ। কিন্তু লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ-বাণিজ্যের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য জানান, স্কুল গভর্নিং বডির সভাপতি বিষুষ্ণপুর গ্রামের জনৈক বিএনপি নেতার ছেলের বউকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য কমিটির সভাপতি উঠেপড়ে লেগেছেন। এ জন্য কিছু সদস্যকে গভর্নিং বডির সভায় ওই প্রার্থীর পক্ষে মতামত দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। নিয়োগে বিরোধিতা করলে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে অন্য আরেক সদস্যকে।
এ ব্যাপারে ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, স্কুলের সঙ্গে আমার বাড়ি। স্কুলের লাইব্রেরি নেই, বইয়ের আলমারিও নেই। শুধু টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি। স্কুল কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য আব্দুল কাদের জানান, সভাপতি কোনো নিয়মকানুন মানছেন না।
বিষুষ্ণপুরের বিএনপি নেতা আফছার মেম্বারের ছেলের বউকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছেন। কিসের বিনিময়ে প্রকাশ্যে এমন করছেন, তা আমার বোধগম্য নয়। স্কুুলের বইপত্র, লাইব্রেরি, আলমারি আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্কুুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখানে কোনো বইয়ের আলমারি নেই, লাইব্রেরির জন্য আলাদা কক্ষ নেই। লাইব্রেরিয়ান নিয়োগের বিষয়টি কমিটি দেখে। এ ব্যাপারে আমার কোনো কিছু করণীয় নেই।
বইয়ের লাইব্রেরির ব্যাপারে অন্য শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, আমরা এমন দৈন্যতার মধ্যে আছি; ঠিকমতো বেসরকারি অংশের বেতনই পাই না, বই কিনব কীভাবে। সে কারণে বইও নেই, লাইব্রেরিও নেই।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, যেখানে লাইব্রেরি নেই সেখানে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দেওয়া সঠিক নয়।
স্কুল কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মোসলেম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে তার কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করা